নির্যাতন করে জামায়াতকে দমানো যায় না : মুজিবুর রহমান

Aug 25, 2023 - 21:03
 0
নির্যাতন করে জামায়াতকে দমানো যায় না : মুজিবুর রহমান

নির্যাতন করে জামায়াতকে দমানো যাবে না মন্তব্য করে জান-মালের কুরবানীর বিনিময়ে হলেও জুলুমবাজ সরকারের মোকাবিলা করে বিজয়ী হতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, আমাদের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে কুচক্রী মহল ভেবেছিল জামায়াত শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু মহান আল্লাহর মেহেরবানীতে জামায়াত আরও শক্তি সঞ্চার করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। একইভাবে সরকার রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগ করে ফ্যাসিস্ট কায়দায় আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাজা রাজধানীতে করতে না দিয়ে এদেশের তৌহিদী জনতার অন্তরে আঘাত হেনেছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনী এবং ধর্মীয় ও সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী। অপরদিকে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ জুলুমের শিকার হয়ে কারাগারে বন্দী রয়েছেন। অবিলম্বে আমরা তাদের মুক্তির দাবি করছি।

মুজিবুর রহমান বলেন, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অথচ তারা সরকারের পেটোয়া বাহিনী হিসেবে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের উপর জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যেকোনো নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে বাঁধা ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে বর্বরোচিত নির্যাতনের ঘটনা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। জেল-জুলুম, মামলা-হামলা, নির্যাতন ও হত্যার ভয় দেখিয়ে জামায়াতকে দমিয়ে রাখা যাবে না। একইসঙ্গে জনগণের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকেও বন্ধ করা যাবেনা। তিনি নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই জুলুমবাজ সরকারকে বিদায় জানানোর জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।

শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত ভার্চুয়াল রুকন (সদস্য) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য দেন করেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় প্রচার সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর যথাক্রমে আব্দুস সবুর ফকির ও এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন।

আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে দেলাওয়ার হোসাইন, কামাল হোসাইন, ড. আ. মান্নান, মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য যথাক্রমে অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন, ফরিদ হোসাইন, মাওলানা আবু ফাহিম, ইঞ্জিনিয়ার শেখ আল আমিন, আবু সাদিক, এডভোকেট এসএম কামাল উদ্দিন, ড. মোবারক হোসাইনসহ মহানগরীর কর্মপরিষদ ও মজলিসে শুরার সদস্য।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ আজ এক কঠিন সময় অতিবাহিত করছে। দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, জনগণের কথা বলার অধিকার নেই, এমনকি মানুষের জান ও মালেরও কোনো নিরাপত্তা নেই। সরকার তার সামগ্রিক ব্যর্থতায় দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এমতাবস্থায় রুকন (সদস্য) ভাইদের পিছনে থাকার কোনো সুযোগ নেই। দেশের এই ক্রান্তিকাল উত্তরণে সাহাবায়ে কেরামের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে জামায়াতে ইসলামীর প্রত্যেক রুকনকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সংগঠনের আহ্বানে ভয় ভীতির তোয়াক্কা না করে ইকামতে দ্বীনের কাজকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। জামায়াত সবসময় অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে। এখন সময় এসেছে, জান-মালের কুরবানির বিনিময়ে হলেও জুলুমবাজ সরকারের সাথে মোকাবেলা করে বিজয়ী হতে হবে।

মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, জামায়াতের রুকন হিসেবে আমরা আল্লাহ তায়ালার দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য শপথ গ্রহণ করেছি। এই শপথের কর্মী হিসেবে আমাদের দুই জন সাবেক আমীরে জামায়াত সহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ মজলুম অবস্থায় শাহাদাতের মর্যাদা নিয়ে দুনিয়া থেকে চলে গেছেন। এভাবে অসংখ্য শাহাদাতের নজির আমাদের সামনে রয়েছে। তাই দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টায় জামায়াতের রুকনদের আরও ত্যাগ ও কুরবানীর নজরানা পেশ করে ময়দানে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে। জামায়াতের সর্বস্তরের জনশক্তিদের মজবুত ঈমানের বলে বলিয়ান করে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য ইলমী যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে জামায়াতে ইসলামীর গণভিত্তি রচনার জন্য সংগঠনের রুকনেরাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এজন্য টার্গেট ভিত্তিক সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদেরকে জামায়াতে শামিল করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ব্যাপক ভিত্তিক সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। মানুষের বিপদ-আপদে পাশে থেকে মানবতার সেবা করতে হবে। এ লক্ষ্যে সংগঠনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রুকনদের আরও তৎপর হতে হবে। এই ক্রান্তিকালে দেশ ও জাতির প্রয়োজনে সকল আন্দোলন সংগ্রামে রুকনদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।