আমি চিকিৎসক নই, তবে যে ওষুধ দিয়েছি তাতে রোগী সুস্থ হবে

১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ - রাত ৯:১৭
 0  326
আমি চিকিৎসক নই, তবে যে ওষুধ দিয়েছি তাতে রোগী সুস্থ হবে
অভিযুক্ত ডাক্তার হারুন আর-রশিদ

পটুয়াখালীর মহিপুর সদরের এশিয়া ডেন্টালে চলছে অনিয়মিত চিকিৎসা কার্যক্রম। ডাক্তার না হয়েও নামের আগে লেখেন ডাক্তার। তিন থেকে পাঁচ শ টাকা ভিজিট নিয়ে করেন প্রতারণা। প্রতিষ্ঠানটির সেবার মান নিয়ে রোগী ও এলাকাবাসীর মাঝে ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। সেখানে নিজে চোখের চিকিৎসক না হলেও ভাইয়ের ব্যবস্থাপত্রে চিকিৎসা দেন হারুন-অর-রশীদ নামের এক দন্ত চিকিৎসক।

মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আদনান (৪) নামের এক শিশুকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে বিপাকে পড়েন আদনানের পরিবার। চক্ষু সেবা কেন্দ্রের সত্বাধিকারী ডাক্তার আব্দুল হাকিমের কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে তার ব্যবস্থাপত্রে হাকিম হয়ে চিকিৎসা দেন তার ভাই হারুন তবে নিজের পরিচয় গোপন করে। বিষয়টি তিনি স্বীকার করে বলেন, ডাক্তার হাকিমকে ছবি দেখিয়ে তার প্যাড ব্যবহার করে চিকিৎসা দিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি সরাসরি চিকিৎসক নই, তবে যা লিখেছি তাতে রোগী সুস্থ হয়ে যাবে।

 পূর্ণাঙ্গ ভিসি পেল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়পূর্ণাঙ্গ ভিসি পেল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই এশিয়া ডেন্টালে এমন অনিয়ম চলছে। রোগীদের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এতে অনেক রোগী সঠিক চিকিৎসার অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

 এদিকে ডা. হাকিমের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি নিজে না থেকে অন্যদের দিয়ে নিজের নাম-ঠিকানা সম্বলিত প্যাডে রোগীদের প্রেসক্রিপশন দেন।

 মহিপুরের বাসিন্দা রাকিব হাওলাদার বলেন, আমরা জানি তিনি দাঁতের চিকিৎসা দেন। তার ভাই চোখের চিকিৎসা দেন৷ তিনি তার ভাইয়ের প্রেসক্রিপশনে চোখের চিকিৎসা দেন। এগুলো নিয়ে প্রায়ই রোগীদের সঙ্গে ঝামেলা হয়।

 এ বিষয়ে অভিযুক্ত হারুন অর রশীদ বলেন, আমার ভাইয়ের চেম্বারে গিয়ে রোগীর ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপে তাকে পাঠাই। পরে তার লেখা ওষুধগুলো তার প্যাডে রোগীকে লিখে দেই।

 এ বিষয়ে হাকিমের মুঠোফোনে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় জানার পর কোনও প্রশ্ন না শুনে দেখা করতে বলেন। মোবাইল কোনো কথা বলবেন না বলে সংযোগ বিছিন্ন করে দেন।

 এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, একজনের ব্যবস্থাপত্রে অন্য কেউ চিকিৎসা দেওয়ায় সুযোগ নেই। শিগগিরই বিষয়টি খতিয়ে দেখে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সহযোগিতা নিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।

 পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. খালেদুর রহমান মিয়া বলেন, একজনের প্যাডে অন্য কেউ প্রেসক্রাইব করার সুযোগ নেই। এটা অপরাধ। খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।