যখন সূত্র থেমে যায়:(ধর্ম, বিজ্ঞান ও চূড়ান্ত বাস্তবতা)

১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ - দুপুর ১২:৫১
 0  164
যখন সূত্র থেমে যায়:(ধর্ম, বিজ্ঞান ও চূড়ান্ত বাস্তবতা)
যখন সূত্র থেমে যায়:(ধর্ম, বিজ্ঞান ও চূড়ান্ত বাস্তবতা)

অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম কিছু লিখব।

ধর্ম, স্রষ্টা, দর্শন ও বিজ্ঞানকে ঘিরে আমার নিজের উপলব্ধি, প্রশ্ন, যুক্তি এবং দীর্ঘদিনের চিন্তনপ্রক্রিয়ার ফলাফল তুলে ধরব। এই চিন্তার যাত্রা হঠাৎ শুরু হয়নি; এটি গড়ে উঠেছে দীর্ঘ অধ্যয়ন, অভিজ্ঞতা, পর্যবেক্ষণ ও আত্মসমালোচনার মধ্য দিয়ে যে শেখার প্রক্রিয়া এখনো চলমান, আজীবন চলবে, হয়তো জীবন পরবর্তী অস্তিত্বেও।

যুক্তি, বিশ্বাস এবং আমার নিজস্বভাবে বিকশিত কিছু ধারণার সমন্বয়ে আমি এখানে একটি আলোচনা শুরু করছি। 

এটি কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়, বরং একটি বৌদ্ধিক অনুসন্ধান। বিষয়টি বহুদিনের বিতর্কিত তবুও আমি বিশ্বাস করি, অন্তত একবার পড়ার মতো মূল্য এতে আছে। যদি কারও চিন্তাকে সামান্য নাড়া দিতে পারে, কৌতূহল জাগাতে পারে, কিংবা মানসিক তৃপ্তি ও বোধের আনন্দ দিতে পারে তাতেই এই লেখার সার্থকতা।

এটি সেই ধারাবাহিক ভাবনার প্রথম অংশ।

Mahin Meherab Aunik
Advocate
Supreme Court of Bangladesh (HCD)

যখন সূত্র থেমে যায়:(ধর্ম, বিজ্ঞান ও চূড়ান্ত বাস্তবতা)

 পর্ব - ১:

“Philosophiae Naturalis Principia Mathematica”
এই নামের মধ্যেই ঘোষণা ছিল যে প্রকৃতি আর রহস্য নয়, সে একটি নিয়মে বাঁধা যন্ত্র।মানুষ শিখল কিভাবে গ্রহ ঘোরে!
কারণ আছে,কারণ মাপা যায়,আর যা মাপা যায় তা-ই সত্য!।এই ছিল বিজ্ঞানের বিজয়।কিন্তু এখানেই জন্ম নিল একটি নীরব প্রশ্ন!!
'যা মাপা যায় না, তা কি অপ্রাসঙ্গিক?'

মূল উদ্বেগগুলো হলো:
একটি জ্ঞান-পথের আধিপত্য যেখানে গণিতই শেষ কথা,আর নৈতিকতা, দর্শন, আত্মিক উপলব্ধি ধীরে ধীরে প্রান্তে সরে যায়।

চূড়ান্ত সত্যের ভ্রান্তি
যা আজ সঠিক,কাল সেটাই প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে, ইতিহাস তার সাক্ষী।

নায়ক-কেন্দ্রিক ইতিহাস
যেখানে সমাজ হারিয়ে যায়,মানুষ হয়ে ওঠে শুধুই নামের তালিকা।

সমস্যা জ্ঞানে নয়,
সমস্যা হলো আমরা কখন প্রশ্ন থামিয়ে দিই। যখন কোনো জ্ঞানব্যবস্থা সফল হয়,তখন সেটাই হয়ে ওঠে মানদণ্ড।আর সেই মানদণ্ড একসময় নিজেকেই প্রশ্নের ঊর্ধ্বে তুলে ধরে।

ভবিষ্যতের বড় সংকট
প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, পরিবেশ বা ন্যায়বিচার
এসব ডেটার অভাবে নয়,বরং ভাবনার সীমাবদ্ধতায় জন্ম নেবে।

এই ছবিগুলো ইতিহাস নয়,এগুলো আয়না।যা আমাদের শেখায় প্রকৃতি বোঝা জরুরি,কিন্তু মানুষের অবস্থান ভুলে গেলে চলবে না।গণিত পথ দেখায়,কিন্তু দিক নির্ধারণ করে বিবেক।

আর সত্যিকারের জ্ঞান হলো যে জানে,সে এখনো অনেক কিছু জানে না।

Principia : প্রকৃতির যান্ত্রিক পাঠ

প্রথম চিত্রটি মানবসভ্যতার এক ঐতিহাসিক বাঁক।
Philosophiae Naturalis Principia Mathematica-
এখানে প্রকৃতি আর কাহিনি নয়, সে একটি সমীকরণ।

এই গ্রন্থের মাধ্যমে মানুষ প্রথমবারের মতো বুঝল
গ্রহের গতি ঈশ্বরের খেয়াল নয়,বরং একটি গণনাযোগ্য নিয়ম।সময়, দূরত্ব, ভর সবকিছু এক অদৃশ্য শৃঙ্খলে বাঁধা।

এটি বিজ্ঞানের বিজয়, সন্দেহ নেই।কিন্তু এখানেই জন্ম নেয় একটি সূক্ষ্ম বিপদ - প্রকৃতি বোঝা মানে কি কেবল প্রকৃতির অর্থ বোঝা?
যেখানে গণিত শেষ, সেখানে কি চিন্তাও শেষ?

General Scholium : অনুমানের মৃত্যু, প্রশ্নের সংকোচন:
তৃতীয় ছবির অংশ(General Scholium)-
একটি দৃঢ় অবস্থান ঘোষণা করে:“যা পরীক্ষায় প্রমাণিত নয়,তার ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই।”

এই বক্তব্য বিজ্ঞানের জন্য প্রয়োজনীয় ছিল। কারণ কল্পনা ও অনুমানের নামে তৎকালীন অনেক ভুল ব্যাখ্যা চালু ছিল। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় তখনই,
যখন এই সতর্কতা একটি স্থায়ী মানসিকতা হয়ে ওঠে ফলে “কেন” প্রশ্নটি দুর্বল হয়,“কীভাবে” প্রশ্নটি শক্তিশালী হয় আর অর্থের বদলে কার্যকারিতা মুখ্য হয়। এখানে বিজ্ঞান নিঃশব্দে দর্শনের স্থান দখল করে,কিন্তু দর্শনের দায়িত্ব নেয় না।

Principia-র অন্তর্নিহিত সত্য:

নিয়ম আছে কিন্তু নিয়মদাতা কে? Philosophiae Naturalis Principia Mathematica প্রকৃতিকে একটি নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।
0গ্রহ ঘোরে নির্দিষ্ট পথে, বল ও ভরের মধ্যে সম্পর্ক আছে,কারণ ও ফলাফল একে অপরের সঙ্গে যুক্ত।
কিন্তু এখানেই প্রশ্নটি অনিবার্য-নিয়ম নিজে নিজে সৃষ্টি হয় না। যে প্রকৃতি এত সূক্ষ্মভাবে ভারসাম্য রক্ষা করে,
যেখানে এক চুল এদিক ওদিক হলে গ্রহ ধ্বংস, জীবন অসম্ভব-সেই প্রকৃতির পেছনে কি কোনো ইচ্ছাশক্তি নেই?

পবিত্র কুরআনের ঘোষণা:
“নিশ্চয়ই আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীকে সত্যের ভিত্তিতে সৃষ্টি করেছেন।” (সূরা আনকাবূত, 29:44)

এখানে “সত্য” বলতে কেবল বস্তু নয়,বরং উদ্দেশ্য, শৃঙ্খলা ও প্রজ্ঞা বোঝানো হয়েছে।

২. General Scholium :
“আমি অনুমান করি না”—কিন্তু বিশ্বাস অস্বীকারও করি না":
এই অংশে বলা হয়-যা পর্যবেক্ষণে ধরা পড়ে না,
তা নিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া অনুচিত।কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রায়ই উপেক্ষিত হয় যে 'অস্বীকার না করাই অস্বীকৃতি নয়'।এই গ্রন্থে কোথাও সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করা হয়নি বরং প্রকৃতির নিয়ম আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে একটি গভীর ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে - প্রকৃতি এত সুবিন্যস্ত যে,সে নিজে নিজে হতে পারে না।

বাইবেল (Psalm 19:1):
“The heavens declare the glory of God;
the skies proclaim the work of His hands.”
অর্থাৎ প্রকৃতি নিজেই স্রষ্টার সাক্ষ্য।

৩. The 100 : প্রভাবের পরিমাপে ধর্ম, বিজ্ঞান ও সভ্যতার নির্মাতা:
মাইকেল এইচ. হার্ট রচিত The 100: A Ranking of the Most Influential Persons in History গ্রন্থটি ইতিহাসে প্রভাবের একটি ব্যতিক্রমী বিশ্লেষণ উপস্থাপন করে। লেখক এখানে নৈতিকতা, জনপ্রিয়তা বা ধর্মীয় বিশ্বাস নয়, বরং বাস্তব ঐতিহাসিক প্রভাব,আইন, সমাজ, সভ্যতা ও চিন্তার ধারায় দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন, এই মানদণ্ডকে প্রাধান্য দেন।

এই নিরপেক্ষ বিশ্লেষণের ফলেই তিনটি নাম বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে—

১. হযরত মুহাম্মদ(স:)- ইতিহাসের সর্বাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব (Ranked #1):

লেখক স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন যে, হযরত মুহাম্মদ(স:) ইতিহাসের একমাত্র ব্যক্তি যিনি-

১.ধর্মীয় ও জাগতিক উভয় ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সফল
২.একটি বিশ্বাসব্যবস্থার প্রবর্তক
৩.একই সঙ্গে রাষ্ট্রনায়ক, আইনপ্রণেতা, বিচারক ও সমাজসংস্কারক

যার উপর প্রবর্তিত ধর্ম, আইন ও নৈতিক কাঠামো আজও কোটি কোটি মানুষের জীবনের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রক।

মাইকেল হার্ট লেখেন:
“He was the only man in history who was supremely successful on both the religious and secular levels.”
কুরআন, সুন্নাহ ও ইসলামী শরিয়াহ কেবল বিশ্বাস নয়,এগুলো একটি পূর্ণাঙ্গ সভ্যতাগত ব্যবস্থা, যা আইন, অর্থনীতি, নৈতিকতা ও রাষ্ট্রচিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করে।

এই কারণেই লেখকের দৃষ্টিতে হযরত মোহাম্মদ(স:)  ছিলেন প্রভাবের উৎস, কেবল অনুসারীদের নেতা নন।

২. স্যার আইজ্যাক নিউটন — বিজ্ঞানের কাঠামোগত স্থপতি (Ranked #2):
আইজ্যাক নিউটন দ্বিতীয় স্থানে কারণ-

১.আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন
২.গতি, বল ও মহাকর্ষের সূত্র প্রদান
৩.বিজ্ঞানের ভাষাকে গণিতের সঙ্গে স্থায়ীভাবে যুক্ত করা

নিউটনের কাজ ছাড়া শিল্পবিপ্লব অসম্ভব, আধুনিক প্রযুক্তির ভিত্তি অচিন্তনীয় এমনকি মহাকাশ বিজ্ঞানও অসম্পূর্ণ। তবে নিউটনের প্রভাব ছিল জ্ঞানগত ও কাঠামোগত, তিনি সভ্যতার দিক নির্ধারণ করেছেন, কিন্তু নৈতিক কাঠামো দেননি।

৩. ঈসা (আ.) - নৈতিক বিপ্লবের প্রতীক (Ranked #3):

ঈসা আলাইহিস সালাম ইতিহাসে তৃতীয়, কারণ তাঁর শিক্ষা মানবিকতা, ক্ষমা ও আত্মত্যাগকে কেন্দ্র করে তাঁর অনুসারীদের মাধ্যমে খ্রিস্টধর্ম বিশ্বব্যাপী বিস্তার লাভ করে।পাশ্চাত্য সভ্যতার নৈতিক ভিত্তি গঠনে তাঁর প্রভাব অপরিসীম। যদিও তিনি সরাসরি রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগ করেননি, তাঁর শিক্ষার প্রভাব-
১.আইন
২.মানবাধিকার
৩.সামাজিক নৈতিকতা

এসব ক্ষেত্রে গভীরভাবে প্রোথিত।

এই তিনজনের অবস্থান প্রমাণ করে সভ্যতা কেবল প্রযুক্তিতে চলে না, কেবল নৈতিকতায়ও নয় আবার কেবল বিশ্বাসেও নয়, সভ্যতা টিকে থাকে তখনই, যখন বিশ্বাস দিক দেয়, নৈতিকতা ভারসাম্য আনে, আর বিজ্ঞান বাস্তবায়ন করে।

The 100 অনিচ্ছাকৃতভাবেই একটি গভীর সত্য প্রকাশ করে- ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী মানুষরা
কেবল চিন্তা বদলাননি,
তারা মানুষের জীবনযাত্রা, আইন ও মূল্যবোধ স্থায়ীভাবে রূপান্তরিত করেছেন।

এই কারণেই হযরত মুহাম্মদ(স:) প্রথম, নিউটন দ্বিতীয় এবং ঈসা (আ.) তৃতীয়। এটি কাকতাল নয় বরং সভ্যতার বাস্তব হিসাব।

The 100 : প্রভাব নয়, ক্ষমতার উৎস 
মানুষ ইতিহাস গড়ে—এতে সন্দেহ নেই।
কিন্তু মানুষ নিজে কি নিজের ক্ষমতার উৎস?
সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিও—
• জন্ম নিয়েছে তার ইচ্ছা ছাড়া
• প্রতিভা পেয়েছে তার পরিকল্পনা ছাড়া
• মৃত্যু এড়াতে পারেনি

পবিত্র কুরআন:
“তোমাদের যা কিছু আছে, তা আল্লাহর পক্ষ থেকেই।” (সূরা নাহল, 16:53)
অতএব, ইতিহাসের প্রকৃত চালিকাশক্তি
মানুষ নয়, মানুষের মাধ্যমে কাজ করা ঈশ্বরীয় ইচ্ছা।

৪. অদৃশ্য সত্তার প্রয়োজনীয়তা:
সবকিছু চলমান, কিন্তু চালক কে? বিজ্ঞান বলে—
• শক্তি রূপান্তরিত হয়
• পদার্থ নিয়ম মেনে চলে
• মহাবিশ্ব সূক্ষ্ম ভারসাম্যে টিকে আছে

কিন্তু বিজ্ঞান এটি ব্যাখ্যা করে না—
• কেন এই নিয়মগুলো এমন?
• কেন শূন্যতা নয়, অস্তিত্ব?
• কেন জীবন সম্ভব?

পবিত্র কুরআন:
“তিনি ‘হও’ বললেন, আর তা হয়ে গেল।”(সূরা ইয়াসিন, 36:82)
এখানে কোনো প্রক্রিয়া নয়, ইচ্ছাই চূড়ান্ত কারণ।

৫. হাদিসে বাস্তবতার শেকড়
রাসূল(স:) বলেছেন:“আল্লাহ ছিলেন, তাঁর সঙ্গে কিছুই ছিল না।”(সহিহ বুখারি)।

এটি আধুনিক কসমোলজির সঙ্গে আশ্চর্যজনকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ—যেখানে বলা হয়,সময় ও স্থান শুরু হয়েছে একটি সূচনাবিন্দু থেকে।

৬. আইনস্টাইন ও সৃষ্টিকর্তার ধারণা
আলবার্ট আইনস্টাইন কখনো নাস্তিক ছিলেন না।
তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন-“The more I study science, the more I believe in God.”
আরও বলেন-“God does not play dice with the universe.”অর্থাৎ-এই মহাবিশ্ব কোনো দৈব দুর্ঘটনা নয়,এটি নিয়ন্ত্রিত, উদ্দেশ্যপূর্ণ।তিনি স্পিনোজার ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন-যিনি প্রকৃতির নিয়মে নিজেকে প্রকাশ করেন।

৭. বিজ্ঞান যেখানে থামে,
সেখানে ওহি শুরু হয়:বিজ্ঞান বলে - কীভাবে,ধর্ম বলে-কেন? বিজ্ঞান বলে-নিয়ম আছে,ধর্ম বলে-
নিয়মদাতা আছেন।

Gospel of John 1:1:
“In the beginning was the Word, and the Word was with God,and the Word was God.”

আর কুরআন বলে—
“আল্লাহই সব কিছুর স্রষ্টা।”(সূরা যুমার, 39:62)

৮. নিজস্ব হাইপোথিসিস:

“জ্ঞান-সম্পূর্ণতার ভ্রম” (Illusion of Cognitive Completeness)

আমার ধারণা হলো—
যখন কোনো জ্ঞানব্যবস্থা বাস্তব সমস্যা সমাধানে সফল হয়, তখন মানুষ ধরে নেয়—এই ব্যবস্থাই যথেষ্ট।

ফলে তিনটি ঘটনা ঘটে:
1. প্রশ্ন থেমে যায়, পদ্ধতি পবিত্র হয়
2. মানুষ পদ্ধতির সেবক হয়ে ওঠে
3. ভবিষ্যৎ সংকট চিন্তার বাইরে জন্ম নেয়

এ কারণে আজকের বড় সংকটগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, পরিবেশ ধ্বংস, নৈতিক বিচ্যুতি, সামাজিক বৈষম্য এসব তথ্যের অভাবে নয় বরং ভাবনার কাঠামোর সীমায় আটকে আছে।

প্রশ্নই সভ্যতার প্রাণ:
এই তিনটি ছবি আমাদের শেখায়—প্রকৃতি বোঝা শক্তি দেয়, কিন্তু মানুষ বোঝা দায়িত্ব দেয়। গণিত আমাদের চোখ খুলেছে, কিন্তু বিবেক আমাদের পথ দেখায়। সভ্যতা তখনই নিরাপদ থাকে, যখন জ্ঞান প্রশ্নকে হত্যা করে না, বরং তাকে লালন করে। কারণ
যে প্রশ্ন করতে জানে, সে-ই ভবিষ্যৎ গড়তে পারে।

“নিয়ম মানেই নিয়ন্ত্রক” (Law Implies Lawgiver)

আমার ধারণা যে কোনো সার্বজনিক, ধ্রুব ও যুক্তিসংগত নিয়ম নিজে নিজে অস্তিত্ব লাভ করতে পারে না।যেমন—
• আইন আছে - আইনপ্রণেতা আছে।
• কোড আছে - প্রোগ্রামার আছে।
• মহাবিশ্বে আইন আছে - স্রষ্টা আছেন।

এই স্রষ্টা-দৃশ্যমান নন কিন্তু কার্যকারিতায় সর্বত্র ব্যাখ্যার বাইরে,কিন্তু বাস্তবতার কেন্দ্রে।চূড়ান্ত বাস্তবতা বিজ্ঞান নয়,ধর্ম নয় বরং সত্য - যা বিজ্ঞান আবিষ্কার করে আর ধর্ম প্রকাশ করে।প্রকৃতি চলে নিয়মে,নিয়ম চলে ইচ্ছায়,আর ইচ্ছার উৎস................

"আল্লাহ" 

যিনি এক ও অদ্বিতীয়।“তারা কি আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিকে তাকায় না?”(সূরা আল-ইমরান, 3:191)

কারণ যে দেখে, সে জানে-আর যে জানে,সে বিশ্বাসে পৌঁছে।